
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলো থেকে একের পর স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রলীগ ত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছে ছাত্রলীগের কর্মীরা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিজের ন্যায্য অধিকার আদায় করার লক্ষ্যে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। কেউ যদি কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে তাহলে তাদেরকে হল থেকে বের করে দেওয়ার পাশাপাশি মারার হুমকি দেয় ছাত্রলীগের নেতারা। যা ছাত্রলীগের প্রতি ভালোবাসা ও আত্ননিবেদনে ভাটা তৈরি করে।
অন্যদিকে রবিবার থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগ ও তার ভাড়া করা টোকাইদের নির্মম জুলুম অত্যাচার শুরু হয়। এতে স্বাধীনতার ৫৩তম বছরে এসে মেয়ে শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের ভয়ঙ্কর থাবা সাধারণ শিক্ষার্থী সহ মনের ভিতর চাপা কষ্টের উদ্রেক তৈরি করে ছাত্রলীগের সাধারণ কর্মীদের।
গতকাল মঙ্গলবার সারাদেশে ছাত্রলীগ এবং তার সহযোদ্ধা পুলিশের পাশাপাশি ভাড়াটিয়া টোকাইদের যে তাণ্ডব চলেছে যার ফলে ৭জন শহিদ সহ আহত হয়ে শত শত সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাদ যায়নি সাধারণ পথচারীরাও।
গতকালের এই ঘটনা ছাত্রলীগ সম্পর্কে বিতৃষ্ণা ও ঘৃণার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছায়। যার বদৌলতে গতকাল থেকেই ছাত্রলীগের সাধারণ কর্মীরা একের পর এক ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রলীগের সাথে নিজের সম্পর্ক সমাপ্তির ঘোষণা দেয়।
ছাত্রলীগ ত্যাগকৃত কর্মীরা জানান,‘আজ থেকে নিজের নামের পাশে ছাত্রলীগের নাম কাটতে বাধ্য হলাম। সুস্থ মস্তিষ্কে এত অসম্মান আর নেওয়া যাচ্ছে না! লজ্জ্বাজনক! পুরো জাতির জন্য লজ্জার একটা নামের সাথে নিজেকে আর জড়িয়ে রাখতে পারলাম না। মাফ করবেন। এখন থেকে চবি ক্যাম্পাসে কোনো রাজনীতির সাথে আমি যুক্ত নই।আশা করি কাউকে প্রিয় ভাই না বলেও চারবছর অতিবাহিত করতে পারব।আমি ছাড়তে চাইনি,আমাকে বাধ্য করেছো।ভাই – বোনদের চিৎকারে আমি বাকরুদ্ধ!আজ থেকে আমি স্বাধীন,আমি মুক্ত৷তোমরা এক সত্যিকারর্থে একজন মুজিব সৈনিককে হারালে।আফসোস তোমাদের জন্য।
পরিবারের সদস্যের সাথে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সাথে সম্পর্ক অনেক আগে থেকেই এমন একজন ছাত্রলীগের কর্মী বলেন,‘ আমি জন্মসূত্র থেকেই ছাত্রলীগ করি, আমার পরিবারের সবাই এই সংগঠনটার সাথে জড়িত। কিন্তু আজ আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি আমি ছাত্রলীগ থেকে নিজের নাম কেটে দিচ্ছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় সাধারণ জনগণের পাশে ছিলেন তাদের চাওয়া পাওয়া পূরণ করছেন, কিন্তু আজকে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে যে ন্যাক্কারজনক মৃত্যু খেলায় নিয়োজিত হয়েছে তার সাথে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কোন মিল নেই। তাই আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি আজ থেকে ক্যাম্পাসের কোন রাজনৈতিক দলের সাথে আমি যুক্ত নেয়।’
এভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা নিজেদের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেওয়ার মাধ্যমে ছাত্রলীগের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করেন।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদেরকে সাধুবাদ জানাচ্ছে তাদের সাহসী এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য।
আবু তালহা রাফি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়