পরিবারের মানুষকে ভালো রাখার আশায় মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে অনেকেই বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত কাজ জুটছে না, বরং থাকা-খাওয়ার সমস্যাসহ পোহাতে হচ্ছে নানা দুর্ভোগ।

দা ডেইলি স্টার এর প্রকাশিত এক তথ্য সূত্র থেকে জানা যায় যে, গত ৩১ মে পর্যন্ত জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) থেকে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭২ জন মালয়েশিয়া গেছেন। সেই হিসাবে প্রায় ১৬ হাজার ৯৭০ জন যেতে পারেননি।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভাষ্য মতে, শুধু ৫ শতাংশ নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে পরিদর্শন করছে।
তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন মানুষকে কাজ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদেশ পাঠিয়ে কোন কাজ না দিয়ে প্রতারণা করে যাচ্ছে। যার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বেশিরভাগ প্রবাসীদের।
একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ওমান দুবাই সৌদি আরব কিংবা বিভিন্ন দেশে যাওয়া প্রবাসীদের।

মালয়েশিয়ান প্রবাসীদের ধারণকৃত ভিডিও থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে তাদের হাতে কোন কাজ না থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। খাওয়া-দাওয়ার সমস্যার সাথে কেউ কেউ থাকার জায়গাও পাচ্ছেন না। কেউ কেউ ফুটপাতেই ঘুমিয়ে রয়েছে। এমন তথ্য প্রবাসীদের পাঠানো ভিডিও ফুটেজ ও ছবিতে দেখা যাচ্ছে ।

প্রবাসী কর্মীরা ইত্তেফাককে জানান, দুই তিন মাস ধরে তাঁরা মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।
তাঁরা কেউ চার লাখ, চার লাখ ৫০ হাজার, এমনকি পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত এজেন্সিগুলোকে দিয়েছেন। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। কারো চাকরি এখনো হয়নি, কারো চাকরি হলেও পাচ্ছেন না যথাযথ বেতন, কাউকে আবার চাকরি দিয়েও এক মাস পর বিনা বেতনে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এমন কি নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তাঁদের কাছ থেকে পাসপোর্ট ও ভিসার কাগজপত্র নিয়ে নিয়েছেন । যার কারণে তাঁরা বাইরেও যেতে পারছেন না।
কম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে, কেউ ফোন ধরে না, কেউ কেউ ধরলেও মিথ্যা আশ্বাস দেয়।

গত ২৯ ডিসেম্বর মালয়েশিয়া যাওয়া প্রবাসীদের মধ্যে অন্যতম রিয়াজ হোসেন, ও সাগর মিয়া ইত্তেফাক কে জানান, ‘আসার পর আমাদের প্রথমে কুয়ালালামপুরের এক বাসায় রাখা হয়। তখন আমদের দুই বেলা করে খাবার দেয়া হতো। কাজের কথা বললে আমাদের বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে ধৈর্য ধরতে বলা হয়। কিছুদিন পর সেখান থেকে আমাদের অন্য এক বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর কিছুদিন পরে আমাদের কয়েকজনকে নিয়ে কাজ দেয়া হয়, কিন্তু মাস শেষ হয়ে গেলেও কোন বেতন দেয়া হয় না। এমনকি ঠিকমতো খেতেও পান না তারা।

এদের মধ্যে কেউ কেউ বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ তুলে এজেন্সিকে টাকা দিয়েছে। সঠিক সময় টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে দুশ্চিন্তায় আরো ভেঙে পড়ছে তারা।
তাদের দাবি তাদের টাকা ফিরিয়ে দিয়ে তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে নেয়া হোক, না হয় তাদেরকে কাজ দেয়া হোক।