শিবালয় উপজেলাস্থ যুমনা নদীর আলোকদিয়া অংশে অবাধে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের কাজ। চারটি ভারী খনন যন্ত্র ও দুটি শ্যালো মেশিন দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন। পক্ষান্তরে নদীর তীর ভাঙন শুরু হয়ে ইতোমধ্যে বেশ কিছু বসতভিটা বাড়ি-ঘর, কৃষি জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে পার্শ্ববর্তী চরের বসতবাড়ি, কৃষি জমি, মসজিদ ও স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এলাকার কেউ বাঁধা দিতে গেলে প্রশাসনের অনুমতি আছে বলে জানায় বালু ব্যবসায়ীরা। কেউ বাধা দিতে গেলে মারধরসহ মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেয় সিন্ডিকেটের  লোকজন। সরেজমিনে তদন্ত করে দেখা যায়, আলোকদিয়ার দক্ষিণ তেওতা এলাকায় বালুমহাল ইজারাকৃত জায়গা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে যমুনা নদীর পশ্চিম পাশে রয়েছে বালু উত্তোলনের ৬টি মেশিন ও বেশ কয়েকটি বলগেট।

পিজিসিবির বৈদ্যুতিক পিলারের পাশে ছয়টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করে বলগেট ভরে নিয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পাড়ে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। নদীতে চলে গেছে বহু কৃষিজমি, বসতবাড়ি। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাস্তা-ঘাট। নদী ভাঙনের শিকার হয়ে একটি মসজিদের আসবাবপত্র, চালা বেড়ার টিন খুলে নৌকায় করে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে স্থানীয়রা। প্রতি মুহূর্তে ভাঙছে কৃষি জমি।

ড্রেজার মেশিনে কর্মরত শ্রমিক তৈয়ব আলী বলেন, মেসার্স তাকবীর এন্টারপ্রাইজের নামে বালুমহাল ইজারা নিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে । প্রতিটি বলগেট ভরতে তাদেরকে ৫ থেকে ৭ হাজার করে টাকা দিতে হয়।

জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগকারী মো. জামাল হোসেন জানান, অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। তারা আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যেভাবে বালু উত্তোলন করছে এতে এলাকাবাসী একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাবে। এলাকাবাসীর জান মাল হেফাজতের স্বার্থে এসব অবৈধ ড্রেজার বন্ধে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই।

এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন বলেন, আলোকদিয়া চরের অনেক বসতবাড়ি, কৃষিজমি ও মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙণের বিষয়টি আমরা দেখেছি। শুনেছি যমুনায় বাবু ডাকাত ও জালাল ডাকাতের নিয়ন্ত্রণে ইজারাকৃত এলাকার বাইরে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সেখানে অভিযান চালিয়ে এসব বালু ব্যবসায়ীদের চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে ও দুটি ড্রেজার মেশিন ব্যবহার অনুপযোগী করা হয়েছে। এরপর আরো দুইবার অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা যেতে যেতে তারা খবর পেয়ে সেখান থেকে সটকে পড়ে। মুলহোতাদের ধরার চেষ্টা চলছে।